অ্যার্জে: শুধুমাত্র টিনটিনেই তার গল্প সীমাবদ্ধ নয়
https://bd.toonsmag.com/2019/10/blog-post.html
en.hotelexelmans.com |
শুধুমাত্র কাল্পনিক চরিত্র ও ঘটনাবলীর মাধ্যমে মানুষকে বিনোদন প্রদানের উদ্দ্যেশ্যে নির্মিত হলেও, বেশ কিছু গল্প আমাদের দৈনন্দিন জীবনের আর দশটা অংশের মতই একটা নিয়মিত অংশ হয়ে ওঠে। ঐ সকল গল্পের চরিত্রগুলির দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনা, তাদের জীবনযাত্রার সকল ঘটনাকেই আমরা বিশ্বাস করতে শুরু করি; তাদের জীবনে ঘটা ঘটনা যখন আমরা দেখি এবং অনুধাবন করি, তখন আমরাও ঠিক ঐভাবেই প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করি যেন তা আমাদের নিজেদের জীবনেই ঘটছে। অথচ, এতসব কিছুর পরেও আমরা জানি যে ঐগুলা শুধু গল্প মাত্রই! এসকল গল্পের মতই একটি গল্প হল একজন কিশোর সাংবাদিকের জীবনের বিভিন্ন অদ্ভুত ও রোমাঞ্চকর ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত কমিক গল্প, যে গল্পের মূল চরিত্র ও শিরোনাম হল- টিনটিন। মজার কথা এই যে, এই কমিক স্ট্রিপের রচয়িতা ‘অ্যার্জে’ শুধুমাত্র কমিক রচয়িতাই ছিলেননা, তিনি আরও অনেক বিষয়ে জড়িত ছিলেন; যদিও, এক সময়ে কমিক স্ট্রিপেই তিনি তার সমস্ত ধ্যানজ্ঞান নিবিষ্ট করেন।
প্রাথমিক জীবন
অ্যার্জে- মূলত ‘জর্জেস প্রসপার রেমি’ নামক একজন বেলজিয়ান কার্টুনিস্ট এর ছদ্মনাম। এই ছদ্মনামটি তার প্রকৃত নামের উচ্চারণের সময় অক্ষরগুলো ভিন্নভাবে সাজিয়ে তৈরি করা হয়। বেলজিয়ামের ব্রাসেল্স এর কাছে ইটারবীক শহরে ১৯০৭ সালের ২২ মে তিনি জন্মগ্রহণ করেন; আর মৃত্যুবরণ করেন ৭৬ বছর বয়সে ১৯৮৩ সালের ০৩ মার্চ, ব্রাসেল্স এ। তার পিতা অ্যালেক্সিস রেমি একটি কনফেকশনারী ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিতে চাকরি করতেন, আর মা এলিজাবেথ ড্যাফোর ছিলেন গৃহিণী।
তিনি ‘ইক্সেলেস মিউনিসিপ্যাল স্কুল নং ৩’ এ পড়াশোনা করেন এবং সেখানে তার পছন্দের বিষয় ছিল আঁকাআঁকি। এই আঁকাআঁকির জন্য তার সবচেয়ে বেশি আগ্রহের বিষয় ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এর সময়কালে বেলজিয়াম দখলকারী জার্মান সেনা সদস্যদের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজকর্ম। ১৯২০ সালে মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য তাকে ‘সেন্ট-বনিফেস স্কুল’ এ ভর্তি করা হয়, আর এখানেই তিনি প্রথমবারের মত তার কাজ প্রকাশ করার সুযোগ পান।
প্রাথমিক জীবন
অ্যার্জে- মূলত ‘জর্জেস প্রসপার রেমি’ নামক একজন বেলজিয়ান কার্টুনিস্ট এর ছদ্মনাম। এই ছদ্মনামটি তার প্রকৃত নামের উচ্চারণের সময় অক্ষরগুলো ভিন্নভাবে সাজিয়ে তৈরি করা হয়। বেলজিয়ামের ব্রাসেল্স এর কাছে ইটারবীক শহরে ১৯০৭ সালের ২২ মে তিনি জন্মগ্রহণ করেন; আর মৃত্যুবরণ করেন ৭৬ বছর বয়সে ১৯৮৩ সালের ০৩ মার্চ, ব্রাসেল্স এ। তার পিতা অ্যালেক্সিস রেমি একটি কনফেকশনারী ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিতে চাকরি করতেন, আর মা এলিজাবেথ ড্যাফোর ছিলেন গৃহিণী।
তিনি ‘ইক্সেলেস মিউনিসিপ্যাল স্কুল নং ৩’ এ পড়াশোনা করেন এবং সেখানে তার পছন্দের বিষয় ছিল আঁকাআঁকি। এই আঁকাআঁকির জন্য তার সবচেয়ে বেশি আগ্রহের বিষয় ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এর সময়কালে বেলজিয়াম দখলকারী জার্মান সেনা সদস্যদের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজকর্ম। ১৯২০ সালে মাধ্যমিক শিক্ষার জন্য তাকে ‘সেন্ট-বনিফেস স্কুল’ এ ভর্তি করা হয়, আর এখানেই তিনি প্রথমবারের মত তার কাজ প্রকাশ করার সুযোগ পান।
en.tintin.com |
১৯২৫ সালে আর্ট ও কার্টুনিং শেখার জন্য তিনি ‘ইকোল সেন্ট-লুক’ আর্ট স্কুলে ভর্তি হন; যদিও প্রথম লেকচারটাই তার কাছে এতটা অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছিল যে তিনি দ্বিতীয় কোন লেকচার এর জন্য আর ঐ স্কুলে ফিরে যাননি। এই অস্থির মানসিকতা তার কর্মজীবনের প্রাথমিক দিকেও নজরে পরে। ব্যাপারটা এমন ছিল যে তিনি শুরু থেকেই জানতেন যে তিনি ঠিক কী চান, কিন্তু সেই অব্দি পৌঁছাতে তার বেশ খানিকটা সময় লাগে এবং অন্যান্য বেশ কিছু বিকল্প মাধ্যম পার হয়ে আসতে হয়।
কাজ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা
তাকে ফ্র্যাঙ্কো-বেলজিয়ান কমিক্স- যা ‘ব্যাণ্ডেস ডেসিনিজ’ নামে পরিচিত- এর প্রতিষ্ঠাতা বা জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তিনি যে শুধুমাত্র একটি বিখ্যাত কমিক চরিত্রই তৈরি করেছিলেন তাই-ই নয়, বরং তিনি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের কার্টুনিং এর স্টাইল প্রতিষ্ঠা করেন যা তার পরবর্তী সময়ের অনেক কার্টুনিস্টদের অনুপ্রাণিত করে; পীয়ের কালিফোর্ড (স্মার্ফ) এবং অ্যালবার্ট আডার্জো (অ্যাস্টারিক্স) ছিলেন তেমনি দুইজন কার্টুনিস্ট যারা অ্যার্জে’র প্রতিষ্ঠিত ‘লা লিন ক্লেয়ার’ তথা ‘দ্য ক্লিয়ার লাইন’ এর দ্বারা বেশ গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। এই ফর্ম্যাট এ কার্টুন- তথা যে কোনো বস্তু বা চরিত্র- আঁকার ক্ষেত্রে একাধিক লাইনের পরিবর্তে মাত্র একটি লাইনের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তার পেশাজীবনের শুরুটা কিন্তু ততটা মসৃণভাবে হয়নি। একটা বিষয় নিশ্চিত ছিল যে, তিনি সব সময়ই কার্টুন আঁকাতেই বা আঁকাআঁকির দুনিয়াতেই কিছু না কিছু করতে চেয়েছিলেন। ‘দ্য টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি’ নামক খবরের কাগজে তিনি একজন কার্টুনিস্ট হিসেবে কাজ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ঐ পদের পরিবর্তে সেখানকার সাবক্রিপশন বিভাগে তার চাকুরি হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই তার সৃষ্টিশীল মানসিকতার জন্য সেই চাকুরি ছিল নিতান্তই রসকষহীন। তাই সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য তিনি সে চাকুরি ছেড়ে দেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর কাজও তার খুব একটা মনমত ছিল না, আর তাই, আবারো তিনি চাকুরিটি ছেড়ে দেন।
কাজ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা
তাকে ফ্র্যাঙ্কো-বেলজিয়ান কমিক্স- যা ‘ব্যাণ্ডেস ডেসিনিজ’ নামে পরিচিত- এর প্রতিষ্ঠাতা বা জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। তিনি যে শুধুমাত্র একটি বিখ্যাত কমিক চরিত্রই তৈরি করেছিলেন তাই-ই নয়, বরং তিনি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের কার্টুনিং এর স্টাইল প্রতিষ্ঠা করেন যা তার পরবর্তী সময়ের অনেক কার্টুনিস্টদের অনুপ্রাণিত করে; পীয়ের কালিফোর্ড (স্মার্ফ) এবং অ্যালবার্ট আডার্জো (অ্যাস্টারিক্স) ছিলেন তেমনি দুইজন কার্টুনিস্ট যারা অ্যার্জে’র প্রতিষ্ঠিত ‘লা লিন ক্লেয়ার’ তথা ‘দ্য ক্লিয়ার লাইন’ এর দ্বারা বেশ গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। এই ফর্ম্যাট এ কার্টুন- তথা যে কোনো বস্তু বা চরিত্র- আঁকার ক্ষেত্রে একাধিক লাইনের পরিবর্তে মাত্র একটি লাইনের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তার পেশাজীবনের শুরুটা কিন্তু ততটা মসৃণভাবে হয়নি। একটা বিষয় নিশ্চিত ছিল যে, তিনি সব সময়ই কার্টুন আঁকাতেই বা আঁকাআঁকির দুনিয়াতেই কিছু না কিছু করতে চেয়েছিলেন। ‘দ্য টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি’ নামক খবরের কাগজে তিনি একজন কার্টুনিস্ট হিসেবে কাজ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ঐ পদের পরিবর্তে সেখানকার সাবক্রিপশন বিভাগে তার চাকুরি হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই তার সৃষ্টিশীল মানসিকতার জন্য সেই চাকুরি ছিল নিতান্তই রসকষহীন। তাই সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য তিনি সে চাকুরি ছেড়ে দেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর কাজও তার খুব একটা মনমত ছিল না, আর তাই, আবারো তিনি চাকুরিটি ছেড়ে দেন।
justwatch.com |
সঠিক পথে যাত্রার শুরু
‘লু বয়-স্কাউট বেল্জ’ (দ্য বেলজিয়ান বয় স্কাউট) এর জন্য ১৯২৬ সালে প্রকাশিত ‘তোতর, দে লা প্যাত্রুইল দেস হ্যানেতোঁস’ (তোতর অফ দ্য জুন বাগ পেত্রোল)- ছিল কমিক স্ট্রিপে জগতে তার সর্বপ্রথম প্রকাশিত কাজ। অ্যার্জের বয়স ছিল তখন মাত্র ১৯ বছর। একেবারে নিয়মিত প্রকাশিত না হলেও, এই কমিক স্ট্রিপটি টানা ৩ বছর ধরে প্রকাশিত হয়েছিল। এরপরে তিনি ‘লু ভিঙতিয়েম সীকল্’ নামক সংবাদপত্রে একজন ফটোগ্রাফার ও কার্টুনিস্ট হিসেবে যোগদান করেন।
১৯২৯ সালে অ্যার্জে তার বিখ্যাত কমিক চরিত্র ‘টিনটিন’ রচনা করেন। তিনি যে সংবাদপত্রে কাজ করতেন তার সাপ্তাহিকভাবে প্রকাশিত ফিচার ম্যাগাজিন ‘লু পেতিত ভিঙতিয়েম’ এ এটি প্রকাশিত হত। টিনটিনের প্রথম কমিক স্ট্রিপের নাম ছিল ‘টিনটিন ইন দ্য ল্যাণ্ড অফ সোভিয়েতস্’। টিনটিন খুব দ্রুত বহুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। এর ফলে অ্যার্জে ‘কুইক এণ্ড ফ্লাপক্’ নামক দ্বিতীয় আরেকটি কমিক স্ট্রিপ রচনা করেন। এটি ছিল বেলজিয়াম এর রাস্তায় বসবাসকারী দু’টি ছেলের প্রাত্যহিক কার্যকলাপকে কেন্দ্র করে রচিত। পরবর্তী ১০ বছর যাবৎ তিনি টিনটিন ধারাবাহিকের আরও অনেক কমিক স্ট্রিপ রচনা করেন।
‘লু বয়-স্কাউট বেল্জ’ (দ্য বেলজিয়ান বয় স্কাউট) এর জন্য ১৯২৬ সালে প্রকাশিত ‘তোতর, দে লা প্যাত্রুইল দেস হ্যানেতোঁস’ (তোতর অফ দ্য জুন বাগ পেত্রোল)- ছিল কমিক স্ট্রিপে জগতে তার সর্বপ্রথম প্রকাশিত কাজ। অ্যার্জের বয়স ছিল তখন মাত্র ১৯ বছর। একেবারে নিয়মিত প্রকাশিত না হলেও, এই কমিক স্ট্রিপটি টানা ৩ বছর ধরে প্রকাশিত হয়েছিল। এরপরে তিনি ‘লু ভিঙতিয়েম সীকল্’ নামক সংবাদপত্রে একজন ফটোগ্রাফার ও কার্টুনিস্ট হিসেবে যোগদান করেন।
১৯২৯ সালে অ্যার্জে তার বিখ্যাত কমিক চরিত্র ‘টিনটিন’ রচনা করেন। তিনি যে সংবাদপত্রে কাজ করতেন তার সাপ্তাহিকভাবে প্রকাশিত ফিচার ম্যাগাজিন ‘লু পেতিত ভিঙতিয়েম’ এ এটি প্রকাশিত হত। টিনটিনের প্রথম কমিক স্ট্রিপের নাম ছিল ‘টিনটিন ইন দ্য ল্যাণ্ড অফ সোভিয়েতস্’। টিনটিন খুব দ্রুত বহুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। এর ফলে অ্যার্জে ‘কুইক এণ্ড ফ্লাপক্’ নামক দ্বিতীয় আরেকটি কমিক স্ট্রিপ রচনা করেন। এটি ছিল বেলজিয়াম এর রাস্তায় বসবাসকারী দু’টি ছেলের প্রাত্যহিক কার্যকলাপকে কেন্দ্র করে রচিত। পরবর্তী ১০ বছর যাবৎ তিনি টিনটিন ধারাবাহিকের আরও অনেক কমিক স্ট্রিপ রচনা করেন।
europecomics.com |
১৯৩৯ সালের পরে অ্যার্জে ‘লু সয়া’ নামক একটি সংবাদপত্রে যোগদান করেন এবং টিনটিন ধারাবাহিকের কমিক স্ট্রিপের প্রকাশনা চালিয়ে যান। ৫ বছর পরে এডগার পি. জ্যাকবস্ এর সাথে মিলে তিনি টিনটিন ধারাবাহিকের আরেকটি স্ট্রিপ ‘দ্য সেভেন ক্রিস্টাল বলস্’ রচনা করেন; অন্যদিকে, এই ঘটনার দুই বছর পূর্বে তিনি আরও একটি জনপ্রিয় কমিক স্ট্রিপের রচনা শুরু করেন যার নাম ছিল ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চার্স অফ জো, জেটে এণ্ড জোকো’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরেও টিনটিনের জনপ্রিয়তা এতটুকুও কমেনি আর তাই অ্যার্জেও নিয়মিতভাবেই এর প্রকাশনা চালিয়ে যান; যদিও এসময়ে ‘লু সয়া’ ব্যবসায় বন্ধ করে নিতে বাধ্য হয়, কিন্তু তিনি তার পুরনো সহকর্মীদের সাথে চুক্তিবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে থাকেন। এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় এই যে, যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও অ্যার্জে কে নাজ্জি গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে অভিযুক্ত করা হয় এবং এই কারণে তাকে একদিনের জন্য হাজত বাসও করতে হয়।
courrier-picard.fr |
১৯৫০ সালে অ্যার্জে যে সকল বৈচিত্র্যপূর্ণ কাজের সাথে জড়িত ছিল তার সবগুলোর যথাযথ পরিচালনার উদ্দ্যেশ্যে ‘অ্যার্জে স্টুডিওস’ এর প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর পরবর্তী ১০ বছর যাবৎ টিনটিনের রচনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অ্যার্জে পেন্টিং বিষয়েও যথেষ্ট আগ্রহ বোধ করেন; যদিও তার কর্মজীবনের প্রাথমিক সময়ের অন্যান্য খণ্ডকালীন বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার মতই এই আগ্রহের বিষয়টিও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ফিকে হয়ে যায়।
কর্মজীবনের শুরুতে কার্টুন রচনা করা তার মূল কাজ ছিলনা; বরং তিনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কাজের জন্য প্রয়োজনীয় বিজ্ঞাপণ তৈরির ব্যাপারেই বেশি আগ্রহী ছিলেন। এই দুই ধরনের কাজের মধ্যে বলার মত তেমন কোনো সাদৃশ্য না থাকলেও, এই দুই ক্ষেত্রেই অ্যার্জে তার কাজের মধ্যে একটি বিশেষ সাদৃশ্য বজায় রাখতেন, আর তা হল- দ্য ক্লিয়ার লাইন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে তার কাজের একটি উদাহরণ হল- বেলজিয়ান ক্যাম্পিং ক্লাবের অফিসিয়্যাল নিউজলেটার ‘লা টেন্টে’র কভার, যা ডিজাইন করার জন্য তিনি মাত্র ডজন খানেক স্ট্রোক ব্যবহার করেছিলেন।
টিনটিনের জগৎ
কর্মজীবনের শুরুতে কার্টুন রচনা করা তার মূল কাজ ছিলনা; বরং তিনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কাজের জন্য প্রয়োজনীয় বিজ্ঞাপণ তৈরির ব্যাপারেই বেশি আগ্রহী ছিলেন। এই দুই ধরনের কাজের মধ্যে বলার মত তেমন কোনো সাদৃশ্য না থাকলেও, এই দুই ক্ষেত্রেই অ্যার্জে তার কাজের মধ্যে একটি বিশেষ সাদৃশ্য বজায় রাখতেন, আর তা হল- দ্য ক্লিয়ার লাইন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে তার কাজের একটি উদাহরণ হল- বেলজিয়ান ক্যাম্পিং ক্লাবের অফিসিয়্যাল নিউজলেটার ‘লা টেন্টে’র কভার, যা ডিজাইন করার জন্য তিনি মাত্র ডজন খানেক স্ট্রোক ব্যবহার করেছিলেন।
টিনটিনের জগৎ
১৯৪৬ সালে অ্যার্জে, টিনটিন ম্যাগাজিনের প্রথম ইস্যুটি প্রকাশ করেন। একজন কিশোর সাংবাদিক ও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে তার অ্যাডভেঞ্চারের গল্প নিয়ে রচিত হয় এই ধারাবাহিকের সকল কাহিনী। এই কিশোরটিকে একটি স্বকীয় বেশভূষা ও অবয়ব প্রদান করা হয়- তার মাথার ছিল ছোট করে ছাঁটা সামনের দিকে সামান্য খাঁড়া হয়ে থাকা সোনালি চুল এবং হাঁটুর সামান্য নিচ পর্যন্ত লম্বা প্যান্ট। তার এই বেশভূষা চিরকালই এক রকম ছিল। এই ধারাবাহিকটি এর সৃষ্টির সময়কাল থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত মোট ২৩ টি অ্যালবামে ৩০ টি ভাষায় প্রকাশিত হয় এবং বিশ্বব্যাপী এর মোট ৭০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়।
daisyrootsbooks.co.uk |
সংবাদপত্রে প্রথম প্রকাশের কিছু সময় পরে তা প্রথমবার অ্যালবাম আকারে প্রকাশিত হয়। ‘দ্য ব্ল্যাক আইল্যাণ্ড’ ছিল টিনটিন ধারাবাহিকের প্রথম গল্প যা ১৯৫৮ সালে ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়েছিল। যদিও টিনটিনের অভিযান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘটেছিল বলে দেখানো হয়েছিল, এর স্রষ্টা অ্যার্জে কিন্তু মোটেও ভ্রমণপ্রেমী ছিলেননা, তাকে খুব কমই মাতৃভূমি ব্রাসেল্সের বাইরে দেখা যেত। গল্পগুলো অ্যাডভেঞ্চার ও বিপদে পরিপূর্ণ থাকলেও, সেগুলোতে কোনোরকম সহিংসতা তুলে ধরা হয়নি। ঘটনাবহুল গল্পের মাঝে খুব সামান্য পরিমাণে হাস্যরসের ব্যবহারের কারণে এগুলো খুব সহজেই বাচ্চাদের মনে স্থায়ী একটা ভাললাগার জায়গা তৈরি করে নিতে সক্ষম হয়।
অ্যাস্টারিক্স ধারাবাহিকের চলচ্চিত্রগুলি বাণিজ্যিক সফলতা লাভ করলে পরে, অ্যার্জে, টিনটিন ধারাবাহিকের দু’টি গল্প নিয়েও পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের অনুমতি দেন। ১৯৬৯ সালে ‘টিনটিন এণ্ড দ্য টেম্পল অফ দ্য সান’ ছিল বড় পর্দায় প্রদর্শিত এই ধারাবাহিকের প্রথম গল্প, আর ঠিক তিন বছর পরে ১৯৭২ সালে ‘টিনটিন এণ্ড দ্য লেক অফ শার্কস’ নামে দ্বিতীয় চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়।
পরবর্তী জীবন
রেডিয়েশন ব্যবহারের কারণে অ্যার্জে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হারানোর ফলে তার দু’টি বিয়ের কোনোটিতে কোনো সন্তানের জন্ম হয়নি। ১৯৮৩ সালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করার পূর্বে তিনি চার বছর যাবৎ বোন মেরোও ক্যান্সারে ভুগেছিলেন। বেলজিয়ামের ‘লুভেঁয়া-লা-ন্যুভ’ এ ২০০৯ সালে অ্যার্জের সারা জীবনের কাজের সংগ্রহ নিয়ে একটি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। ফরাসি স্থপতি ক্রিশ্চিয়ান দে পোর্জ্যাম্পাক এই জাদুঘরের নকশা করেন।
অ্যাস্টারিক্স ধারাবাহিকের চলচ্চিত্রগুলি বাণিজ্যিক সফলতা লাভ করলে পরে, অ্যার্জে, টিনটিন ধারাবাহিকের দু’টি গল্প নিয়েও পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের অনুমতি দেন। ১৯৬৯ সালে ‘টিনটিন এণ্ড দ্য টেম্পল অফ দ্য সান’ ছিল বড় পর্দায় প্রদর্শিত এই ধারাবাহিকের প্রথম গল্প, আর ঠিক তিন বছর পরে ১৯৭২ সালে ‘টিনটিন এণ্ড দ্য লেক অফ শার্কস’ নামে দ্বিতীয় চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়।
পরবর্তী জীবন
রেডিয়েশন ব্যবহারের কারণে অ্যার্জে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হারানোর ফলে তার দু’টি বিয়ের কোনোটিতে কোনো সন্তানের জন্ম হয়নি। ১৯৮৩ সালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করার পূর্বে তিনি চার বছর যাবৎ বোন মেরোও ক্যান্সারে ভুগেছিলেন। বেলজিয়ামের ‘লুভেঁয়া-লা-ন্যুভ’ এ ২০০৯ সালে অ্যার্জের সারা জীবনের কাজের সংগ্রহ নিয়ে একটি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। ফরাসি স্থপতি ক্রিশ্চিয়ান দে পোর্জ্যাম্পাক এই জাদুঘরের নকশা করেন।
twitter.com |
তার ঘটনাবহুল ও বৈচিত্র্যময় কর্মজীবনের মাধ্যমে এটাই বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছেন যে জীবনের শুরুতেই সবকিছু সঠিকভাবে শুরু হতে হবে তা জরুরী নয়, এমনকি কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়াতেও দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই; কারণ তা না হলে একজন মানুষের প্রকৃত প্রতিভার পরিচয় পাওয়া সম্ভব হবেনা এবং এটাও জানা যাবেনা যে কীভাবে একজন মানুষ তার যোগ্যতা অনুযায়ী চূড়ান্ত সাফল্য লাভ করতে পারে। সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ভিত্তিতে চিন্তা করলেও দেখা যায় যে তার জীবন নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পার হলেও, একবার তার জীবনের সঠিক নির্দেশনা পাওয়ার পরে তিনি কখনই হাল ছেড়ে দেননি।