`অনেক কিছুই লেখার ছিল কিন্তু হয়ে উঠছে না’
সাইমুম সাদ বিডি.টুনসম্যাগ.কম ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে মা আয়েশা ফয়েজ খুব বেশিদিন নয়, মাস খানেক আগের কথা। আবিদ আজম ভাই একটা অ্যাসাইনমেন্ট...
https://bd.toonsmag.com/2014/09/blog-post_32.html
সাইমুম সাদ
বিডি.টুনসম্যাগ.কম
খুব বেশিদিন নয়, মাস খানেক আগের কথা। আবিদ আজম ভাই একটা অ্যাসাইনমেন্ট দিলেন, ‘আয়েশা ফয়েজের ইন্টারভিউ করতে হবে।’ শুনেই কাজটি করতে আগ্রহী হলাম। ভেততে ভেতরে চাপা উত্তেজনা কাজ করছিল। কারণ রত্নগর্ভা এই মায়ের কথা বহু শুনেছি, বিভিন্ন জায়গায় পড়েছিও। অথচ এর আগে তার সঙ্গে দেখা করা বা কথা বলার সৌভাগ্য আমার হয়নি। তাই সুযোগটা আমি কিছুতেই হাতছাড়া করতে চাইনি। সত্যি বলতে সেই দিনটার জন্য আমি মুখিয়ে ছিলাম।
নির্ধারিত সন্ধ্যায় আমরা হাজির হলাম রম্য লেখক, কার্টুনিষ্ট আহসান হাবীবের পল্লবীর বাসায়। আহসান হাবীবের সাথে কুশল বিনিময় শেষে জানলাম আয়েশা ফয়েজ এই বাসায় নেই। শুনেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু পরক্ষণেই আহসান হাবীব আশ্বস্ত করলেন, পাশেই মেয়ে সুফিয়া হায়দারের বাসা। সেখানেই মা আছেন। কয়েক কদম এগুতেই পৌঁছে গেলাম সেই বাসায়।
ওয়েটিং রুমে বসে আছি। আগেই ভেতরে খবর পাঠানো হয়েছে। বেশিক্ষণ বসতে হলো না। আয়েশা ফয়েজ এলেন। মেয়ের ঘাড়ে হাত দিয়ে খুব সতর্ক হয়ে কদম ফেলছেন। কারণ ডাক্তার বলে দিয়েছেন, কিছুতেই একা হাঁটাচলা করা যাবে না। তাই এই সতর্কতা। কথা বলতে একটু কষ্ট হচ্ছিল। আমরা সালাম করলাম। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, ‘বাবা, তোমরা ভালো আছো?’
এই একটি কথাতেই রুমের পরিবেশ বদলে গেল। শুরু করলাম আমাদের প্রশ্নোত্তরপর্ব। অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে লাগলেন। যদিও একটু এরপরই হাঁপিয়ে উঠছিলেন। কিন্তু দম নিয়ে আবার বলছিলেন। আপন মনেই বলছিলেন, শৈশবের কথা, তারুণ্যের কথা, ছেলেমেয়েদের কথা। বলতে বলতে গলাটা যেন ধরে এলো। নাহ! আর বলতে পারলেন না। চোখ জলে ভিজে উঠল। তার মেয়ে সুফিয়া হায়দার জানালেন, মা ইদানীং অতীতের কথা মনে করে প্রায় কাঁদেন।
এখন আপনার দিন কীভাবে কাটছে জানতে চাইলে আঁচল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে জানালেন, ‘কোনো কাজ-কর্ম করতে পারি না। বই, কোরান পড়ি। নামাজ পড়ি।’ আর লেখালেখি? প্রশ্ন করতেই একটু হাসলেন- ‘নাহ! আর লিখতে পারি না। অনেক কিছুই লেখার ছিলো কিন্তু হয়ে উঠছে না।’
আয়শা ফয়েজ ‘জীবন যে রকম’ নামে একটি আত্মজীবনী লেখেন। সেখানে অনেক কথাই ছিল। তারপরও কত কথাই তো আমাদের অজানাই রয়ে গেল। এক বইয়ের মলাটে তো আর পুরো জীবন ধরে রাখা যায় না। আমরাও তো তাকে ধরে রাখতে পারলাম না। মর্ত্যলোক ছেড়ে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন অনন্তের উদ্দেশে। তিনি কী লিখেতে চেয়েছিলেন আর কখনওই আমরা তা জানতে পারব না।
বিডি.টুনসম্যাগ.কম
ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে মা আয়েশা ফয়েজ |
খুব বেশিদিন নয়, মাস খানেক আগের কথা। আবিদ আজম ভাই একটা অ্যাসাইনমেন্ট দিলেন, ‘আয়েশা ফয়েজের ইন্টারভিউ করতে হবে।’ শুনেই কাজটি করতে আগ্রহী হলাম। ভেততে ভেতরে চাপা উত্তেজনা কাজ করছিল। কারণ রত্নগর্ভা এই মায়ের কথা বহু শুনেছি, বিভিন্ন জায়গায় পড়েছিও। অথচ এর আগে তার সঙ্গে দেখা করা বা কথা বলার সৌভাগ্য আমার হয়নি। তাই সুযোগটা আমি কিছুতেই হাতছাড়া করতে চাইনি। সত্যি বলতে সেই দিনটার জন্য আমি মুখিয়ে ছিলাম।
নির্ধারিত সন্ধ্যায় আমরা হাজির হলাম রম্য লেখক, কার্টুনিষ্ট আহসান হাবীবের পল্লবীর বাসায়। আহসান হাবীবের সাথে কুশল বিনিময় শেষে জানলাম আয়েশা ফয়েজ এই বাসায় নেই। শুনেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু পরক্ষণেই আহসান হাবীব আশ্বস্ত করলেন, পাশেই মেয়ে সুফিয়া হায়দারের বাসা। সেখানেই মা আছেন। কয়েক কদম এগুতেই পৌঁছে গেলাম সেই বাসায়।
ওয়েটিং রুমে বসে আছি। আগেই ভেতরে খবর পাঠানো হয়েছে। বেশিক্ষণ বসতে হলো না। আয়েশা ফয়েজ এলেন। মেয়ের ঘাড়ে হাত দিয়ে খুব সতর্ক হয়ে কদম ফেলছেন। কারণ ডাক্তার বলে দিয়েছেন, কিছুতেই একা হাঁটাচলা করা যাবে না। তাই এই সতর্কতা। কথা বলতে একটু কষ্ট হচ্ছিল। আমরা সালাম করলাম। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, ‘বাবা, তোমরা ভালো আছো?’
এই একটি কথাতেই রুমের পরিবেশ বদলে গেল। শুরু করলাম আমাদের প্রশ্নোত্তরপর্ব। অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে লাগলেন। যদিও একটু এরপরই হাঁপিয়ে উঠছিলেন। কিন্তু দম নিয়ে আবার বলছিলেন। আপন মনেই বলছিলেন, শৈশবের কথা, তারুণ্যের কথা, ছেলেমেয়েদের কথা। বলতে বলতে গলাটা যেন ধরে এলো। নাহ! আর বলতে পারলেন না। চোখ জলে ভিজে উঠল। তার মেয়ে সুফিয়া হায়দার জানালেন, মা ইদানীং অতীতের কথা মনে করে প্রায় কাঁদেন।
এখন আপনার দিন কীভাবে কাটছে জানতে চাইলে আঁচল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে জানালেন, ‘কোনো কাজ-কর্ম করতে পারি না। বই, কোরান পড়ি। নামাজ পড়ি।’ আর লেখালেখি? প্রশ্ন করতেই একটু হাসলেন- ‘নাহ! আর লিখতে পারি না। অনেক কিছুই লেখার ছিলো কিন্তু হয়ে উঠছে না।’
আয়শা ফয়েজ ‘জীবন যে রকম’ নামে একটি আত্মজীবনী লেখেন। সেখানে অনেক কথাই ছিল। তারপরও কত কথাই তো আমাদের অজানাই রয়ে গেল। এক বইয়ের মলাটে তো আর পুরো জীবন ধরে রাখা যায় না। আমরাও তো তাকে ধরে রাখতে পারলাম না। মর্ত্যলোক ছেড়ে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন অনন্তের উদ্দেশে। তিনি কী লিখেতে চেয়েছিলেন আর কখনওই আমরা তা জানতে পারব না।