দাম্পত্য শিল্পের বন্ধনে...
বিডি.টুনসম্যাগ.কম শিল্পী ফারেহা জেবা ও শিল্পী সাইদুল হক জুইস শিল্পী ফারেহা জেবা ও শিল্পী সাইদুল হক জুইস। দুজনই নন্দিত শিল্পী। জুইস খ...
https://bd.toonsmag.com/2015/03/011253.html
বিডি.টুনসম্যাগ.কম
শিল্পী ফারেহা জেবা ও শিল্পী সাইদুল হক জুইস |
শিল্পী ফারেহা জেবা ও শিল্পী সাইদুল হক জুইস। দুজনই নন্দিত শিল্পী। জুইস খ্যাত হয়েছেন ‘মুখোশ’ নির্মাণে। অন্যদিকে ফারেহা জেবার চিত্রমালাজুড়ে থাকে নারী, এসিডদগ্ধ নারীদের কথা এবং নারীসত্তা! শিল্পের সমীকরণে আলোকিত তাদের দাম্পত্য নিয়ে জানাচ্ছেন রাজেশ্বরী প্রিয়রঞ্জিনী
চারুকলা ইন্সটিটিউটের প্রিন্ট মেকিং ডিপার্টমেন্টের সহপাঠী ছিলেন দু’জন। দু’জনই ছিলেন কাজ-পাগল। দু’জন দু’টি ধারায় কাজ করেন। ভালোবেসেই বিয়েটা হয়েছিল, জয় হয়েছিল শিল্প ও শুভ বোধের। দাম্পত্য ও ভালোবাসাকে দু’জনই নন্দিত করেছেন শ্রদ্ধা ও স্বাধীনতাকে উপজীব্য করে। আর তাই ফারেহা জেবা শিক্ষকতা করেন, ছবি আঁকেন ‘নারী’-কে বিষয় করে, নারী, নারী চরিত্র, দহন, এসিড ভিকটিম, বেগম সুফিয়া কামাল, ফ্রিডা কাহেলা... বিষয়গুলো ফারেহা জেবার চিত্রমালার বিষয়।
সাইদুল হক জুইসের ভুবন ‘মুখোশ’ নিয়ে। লোকজ ফর্ম, থ্রি ডাইমেনশনাল কাজ... সবমিলে আবহমান বাংলার মুখ তিনি ফুটিয়ে তোলেন মুখোশে। ‘মুখোশ’ বললেই বাংলাদেশে সর্বাগ্রে আসবে শিল্পী জুইসের নাম। উত্তরার বাড়িটি সাজিয়েছেন মনের মতন, ফুল-ফলের বাগানের সংসার। প্রকৃতিপ্রিয় দু’জনই ভালোবাসেন শিল্প, প্রকৃতি, প্রাণী এবং মানুষ। তাই তাদের বাড়িটি অনায়াসেই বন্ধু-বান্ধব-স্বজন ঘিরে হয়ে ওঠে এক ভালোবাসার পরম আশ্রয়... এক বহমান শিল্পালয়। জীবন-যাপনের ছন্দে চর্চার একমাত্র চালিকাশক্তি ‘শিল্প’! শিল্পকে সাথী করেই অপার বন্ধুত্বের দাম্পত্য, অহর্নিশ বন্ধনের পরম সৃজন। বাড়িতে আছে আর্ট স্কুল। ছবি আঁকা শেখানো ও নিজেদের শিল্পচর্চা ছাড়াও দু’জনই রান্না করেন, বেড়াতে যান। ভালোবাসেন বিভিন্ন শিল্পীর কাজ ও শিল্প দর্শন। বাড়িতে জুইসের মুখোশের স্টুডিও। সংসারকে এক অভয়ারণ্যের মতন ছন্দিত রেখেছেন তারা। দু’জনের কাছেই গুরুত্ব পায় শিল্প ও মানবতা। শিল্পের জন্য উচ্চাভিলাষিতা নয়, নিরন্তর ভালোবাসা বোধ লালন করেন তারা। নিরন্তর নিভৃতেই কাজ করে এসেছেন দু’জন।
নারী হিসেবে বলিষ্ঠ জেবার চিত্র-ভুবন, অন্যদিকে জুইসের কাছে নারী-পুরুষের সংজ্ঞাটাই একটি গুরুত্বপূর্ণ সমতার আবাহন! জীবনের সার্থকতাই নারী-পুরুষের বন্ধুত্ব, সাম্যতা ও শ্রদ্ধায়, যা সত্যিই জীবনের এক বহমান শিল্পকলার মতন নন্দিত বোধ! সেই শিল্প বন্ধনেই সম্পর্কের ক্যানভাস হয়ে ওঠে পরম নন্দন! জীবনের লড়াই, শিল্পের পথ চলা সবটুকুই ঘটে চলে অনেকটাই অনায়াস স্বাচ্ছন্দ্যে। শিল্পী ফারেহা জেবা মনে করেন প্রতিটি শিল্পীর নিজস্ব স্বাধীনতা বোধ আছে। সেটি জীবনে খুব জরুরি। শিল্পী জুইস মনে করেন শিল্পী বা সৃজনশীল মানুষের একটি স্পেস দরকার। এই স্পেসটা বন্ধুত্বপূর্ণ এবং বোঝাপড়ার। সম্পর্ককে মুক্তি দিতে হয়, তবেই সেই সম্পর্ক বন্ধুত্বের হয়। পরস্পরকে তাই মুক্তির অপার আনন্দে পরম বন্ধনে বেঁধে রেখেছেন জুইস ও জেবা। শিল্প হয়ে ওঠে যেখানে বন্ধনের রাখী, বন্ধুত্বের মিলিত ছন্দ! দৈনিক ইত্তিফাকে প্রকাশিত