এখন আঁকা আঁকি নিয়েই ব্যস্ত
বিডি.টুনসম্যাগ.কম সুমনা হক জিঙ্গেলের রানী বলেই খ্যাত ছিলেন। এখন জিঙ্গেল থেকে বহুদূরে তিনি। শুধু জিঙ্গেলেই নয় গান গাওয়া থেকেই আপা...
https://bd.toonsmag.com/2014/12/6.html
সুমনা হক জিঙ্গেলের রানী বলেই খ্যাত ছিলেন। এখন জিঙ্গেল থেকে বহুদূরে তিনি। শুধু জিঙ্গেলেই নয় গান গাওয়া থেকেই আপাতত দূরে আছেন তিনি। কিন্তু কেন? সুমনা হকের সাম্প্রতিক বিষয়াদি নিয়ে আজকের ইন্টারভিউ-
কেমন আছেন?
সব মিলিয়ে বেশ ভালো আছি। ব্যক্তিগত জীবন নিয়েই আসলে এখন বেশি ব্যস্ত। এই ব্যস্ততার মধ্যেই এখন সুখ খুঁজে পাই। যে কারণে জিঙ্গেলে কিংবা গানে এখন একেবারেই সময় দেওয়া হয়ে ওঠে না। যতটুকু সময় পাই অাঁকাঅাঁকি করেই কেটে যায়।
শুনেছিলাম এ বছরের শেষে আপনার একক চিত্র প্রদর্শনী হওয়ার কথা?
ঠিকই শুনেছিলেন। কিন্তু সবমিলিয়ে আসলে শেষ করা সম্ভব হয়নি। তাই এ বছর আর চিত্রপ্রদর্শনী করাই গেল না। দেখা যাক নতুন বছরে হয়তো চিত্রপ্রদর্শনী করব। আসলে আমার কোনো কাজেই তেমন তাড়াহুড়া নেই। ব্যক্তি জীবনে আমি যেমন চুপচাপ, শান্ত থাকার চেষ্টা করি, ঠিক তেমনি আমার কাজেরও গতি ধীর। মন চাইলে অাঁকতে বসি নইলে নয়। শিল্পীর মুডের ওপর আসলে তার সৃষ্টি বেরিয়ে আসে। মুড ভালো না থাকলে একজন শিল্পীর কাছ থেকে জোর করে কোনো কিছু বের করা যায় না।
এ পর্যন্ত কতবার চিত্রপ্রদর্শনী করেছেন আপনি?
এ পর্যন্ত পাঁচবার আমার একক চিত্রপ্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশে তিনবার এবং দেশের বাইরে জাপানে ও আমেরিকায় দু্ইবার আমার একক চিত্রপ্রদর্শনী হয়েছে। শিল্পী এস এম সুলতান, জয়নুল আবেদিন কিংবা এমন প্রখ্যাত কারও ক্যানভাসে অাঁকা ছবি আমাকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে।
গত ঈদুল ফিতরে হঠাৎ দেশ টিভিতে আপনাকে গান গাইতে দেখা গিয়েছিল?
হুম, হঠাৎ করেই আমরা পুরনো কয়েকজন লাইভ অনুষ্ঠানে গেয়েছিলাম। অনেকদিন পর পুরনোদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। বেশ ভালো লেগেছিল গান গাওয়ার পাশাপাশি স্মৃতিচারণ করতে। এ ধরনের অনুষ্ঠানে গাইতে পারার আনন্দটাই অন্যরকম। কারণ মানুষ আসলে পুরনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করতে ভালোবাসে। সেটা তার ছোটবেলার হোক, ছাত্রজীবনের হোক কিংবা কর্মক্ষেত্রের হোক। তাই অনুষ্ঠানটি অনেক ভালো লেগেছিল।
আপনার গানের শুরুটা কার কাছে এবং প্রথম গানের অ্যালবাম কবে এসেছিল?
ছোটবেলায় ওস্তাদ গোপাল চন্দ্র দাসের কাছে এবং পরবর্তীতে ওস্তাদ ফুল মোহাম্মদের কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীতের তালিম নিলেও বড় হয়ে আধুনিক গানের সংগীত শিল্পী হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করি। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে আমি বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হই। আমার প্রথম একক অ্যালবাম 'মায়াবী রাতে' ১৯৮৮ সালে বাজারে আসে।
এরপর তো প্রায় এক যুগ বিরতির পর আপনার গানের অ্যালবাম আসে?
এক যুগ বিরতির পর বাজারে আসে আমার দ্বিতীয় একক 'মাঝে কিছু বছর গেল'। সর্বশেষ বেঙ্গল মিউজিক থেকে আমার রবীন্দ্র্র সংগীতের অ্যালবাম 'তুমি রবে নীরবে' বাজারে আসে। রবীন্দ্র সংগীতের অ্যালবামটি আসলে আমার মায়ের জন্যই করেছিলাম। মা সবসময়ই চাইতেন আমি যেন গান থেকে দূরে সরে না যাই।
ম্যানোলা মানে টলমল শিশিরের লাবণ্য, রানী রানী রানী রানী কোন রানী বৌরানী প্রিন্ট শাড়ি বৌরানী, অন্ধকারে পথ দেখাকে অলিম্পিক অলিম্পিক অলিম্পিক ব্যাটারি, প্রিয় প্রিয় প্রিয়-প্রিয় প্রিয় প্রিয়- এমন অনেক জনপ্রিয় জিঙ্গেলে কণ্ঠ দিয়েছেন আপনি, ফিরবেন না আর এখানে?
আসলে একজন সংগীত শিল্পীর জন্য চর্চাটা খুব জরুরি। চর্চা না থাকলে ভালোভাবে গান গাওয়া যায় না। আমার বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর গানের প্রতি আমার সেভাবে আর মনোযোগ দেওয়া হয় না। আমি চেষ্টা করেছি অনেক, কিন্তু পারি না। হয়তো গান আর সেভাবে আগের মতো করে আমার আর গাওয়া হবে না। কেন হবে না এর কারণটাও আমি বলতে পারি না। কোথায় যেন একটা ঝামেলা হয়ে গেছে। কি সেটা বুঝি না। কিন্তু আমি চাই গান করতে। অথচ পারছি না।
আলী আফতাব
বাংলাদেশ প্রতিদিনের সৌজন্যে