লেখালেখিতে অর্থ ধীরে আসে ধৈর্য্য ধরতে হবে : ইকবাল খন্দকার
ইকবাল খন্দকার। বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় রম্য লেখকদের মধ্যে অন্যতম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের শিক্ষা বিভাগে স্নাতকোত্তর পাশ করা এ লেখকের...
https://bd.toonsmag.com/2014/07/blog-post_28.html
ইকবাল খন্দকার। বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় রম্য লেখকদের মধ্যে অন্যতম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের শিক্ষা বিভাগে স্নাতকোত্তর পাশ করা এ লেখকের জন্ম নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার ভাবলা গ্রামে। স্ত্রী লরা খন্দকার এবং কন্যা ইলমাকে নিয়ে তার সংসার। বর্তমানে বাংলাদেশে যে অল্প কয়জন পেশাদার লেখক আছে, তিনি তাদের একজন। এ পর্যন্ত বইমেলায় তার ২১ টি বই প্রকাশিত হয়েছে। লেখালেখির পাশাপাশি বর্তমানে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে উপস্থাপনা করছেন। টেলিভিশনের জন্য স্ক্রিপ্ট লিখছেন। বাংলাদেশে রম্য লেখায় তুমুল জনপ্রিয় এ লেখককে টুনস ম্যাগের পাঠকের সামনে উপস্থাপন করেছেন- নাদিম মজিদ
ইকবাল খন্দকার |
নাদিম- আপনি লেখালেখিতে কিভাবে আসলেন?
ইকবাল- আমার বাড়ি গ্রামে। যখন ৮ম শ্রেণিতে পড়ি, সে সমযের কথা। হেমন্তে ধান কাটার মৌসুম আসলে বাড়ির উঠোনে ধান কেটে একটি আঁটি সেখানে নিয়ে ফেলেছে কেউ একজন। সে আঁটি থেকে নতুন ধানের ঘ্রাণ আসছিল। তখন খুব মুগ্ধ হয়ে একটি ছড়া লিখেছিলাম। নাম’ নতুন ধান’। তখন বিরতি দিয়ে লেখালেখি করতাম। রেডিওতে চিঠি লেখার সুযোগ ছিল। সে চিঠি যখন পাঠ করা হত, তখন খুব ভাল লাগত। সেখান থেকে পুরষ্কারও পেয়েছিলাম। নিয়মিত লেখালেখির ক্ষেত্রে রেডিও প্রেরণা হিসেবে ছিল। ১৯৯৯ সালে দৈনিক ইনকিলাবে ’উপহার’ নামে সাপ্তাহিক রম্য সাময়িকী ছিল। সেখানে লিখে জাতীয় পত্র-পত্রিকায় আমার লেখালেখি শুরু হয়। আর লেখালেখিকে সিরিয়াসভাবে নিয়েছি ২০০৪ সাল থেকে।
নাদিম- রম্যলেখার পাশাপাশি অন্যান্য লেখাও লিখে থাকেন। এক্ষেত্রে কোন সমস্যা হয় না?
ইকবাল- এ ক্ষেত্রে আমার কোন অসুবিধা হয় না। একটি লেখা লিখতে বসলে লেখার শুরুতে সিদ্ধন্ত নিই, আমি কি লিখব? রম্য, বড়দের উপযোগী না শিশুতোষ লেখা? তারপর লেখা শুরু করি।
নাদিম- আপনি লেখালেখির পাশাপাশি উপস্থাপনা, স্ক্রিপ্ট তৈরি করেন। কেন এত বহুমাত্রিক সৃজনশীল কর্ম পছন্দ করলেন?
ইকবাল- আমার মনে হয়েছে আমি পারব। তাই এমন কাজগুলো হাতে নিয়েছি। স্ক্রিপ্ট রাইটারের সাথে উপস্থাপকের একটি পার্থক্য সবসময় থাকে। যদি আমি নিজেই আমার লেখা স্ক্রিপ্ট উপস্থাপন করি, তাহলে এ পার্থক্য থাকবে না। মূলত লেখালেখি কেন্দ্রিক অন্য কাজগুলোকে আমার কঠিন মনে হয় না।
নাদিম- বাংলাদেশে যে ধরনের রম্যচর্চা হচ্ছে, তাতে আপনি কি সন্তুষ্ট? সন্তুষ্ট না হলে কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন?
ইকবাল- আমাদের দেশে প্রায় জন রম্য বলতে শুধুমাত্র কৌতুক বুঝে থাকেন। ইন্টারনেটের উপর ভরসা করেন। মৌলিক বিষয়ের উপর ভিত্তি করে রম্যচর্চা হলে ঠিক আছে, না হয় সঠিক জায়গাতে আসা প্রয়োজন।
নাদিম- লেখালেখি নিয়ে আপনার স্বপ্ন কি?
ইকবাল- আমি সব ধরনের লেখা লিখতে চাই। আমার স্বপ্ন, আমি জীবিত থাকতে যেন আমার লেখা পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভূক্ত হয়।
নাদিম- একসাথে অনেকগুলো ফান ম্যাগাজিনে লেখেন। পত্রিকায় ফিচার, গল্প, শিশুতোষ গল্প লেখেন। এখন ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় সমান ব্যস্ত। আপনি একজন মানুষ এতগুলো কাজ সামাল দেন কিভাবে?
ইকবাল- লেখালেখি আমার পেশা। তাই আমার পুরো সময় এখানে যায়। পুরো ধ্যানধারণা এ লেখালেখিকে ঘিরে। আমি মনে করি, ইচ্ছা এবং ধৈর্য্য থাকলে দুটোই থাকলে সামলানো কঠিন কিছু নয়।
নাদিম- নতুন লেখকদের প্রতি উপদেশ-
ইকবাল- বেশি বেশি পড়তে হবে। নতুন লেখকদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তারা খুব দ্রুত কিছু একটিা হতে চায়্। অর্থ উপার্জনের অনেক অনেক জায়গা আছে। তবে লেখালেখিতে অর্থ ধীরে আসে। ধৈর্য্য ধরতে হবে। অস্থির হওয়া যাবে না । একটা লেখা কম মজা হোক, তবুও নিজের মত করে লিখতে হবে।
নাদিম- সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ইকবাল- আপনাকেও ধন্যবাদ।