দেশ জাতিকে নান্দনিক রূপে গড়ে তোলেন কাইয়ুম চৌধুরী

বিডি.টুনসম্যাগ.কম  ছবি : সংগৃহীত  ঢাকা : কাইয়ুম কবিতা লেখা শিখতে চাইত। আমাকে ছবি আঁকা শেখাত। শেষ বয়সেও কবিতা লিখে ছিল। কিন্তু প্রক...

বিডি.টুনসম্যাগ.কম
 ছবি : সংগৃহীত 

ঢাকা : কাইয়ুম কবিতা লেখা শিখতে চাইত। আমাকে ছবি আঁকা শেখাত। শেষ বয়সেও কবিতা লিখে ছিল। কিন্তু প্রকাশ করে যেতে পারেনি।' পুরো দেশ জাতিকে কেউ যদি নান্দনিক রূপে গড়ে তোলেন তাহলে তিনি কাইয়ুম চৌধুরী।'

কাইয়ুম চৌধুরীর স্মরণে বাংলা একাডেমি আয়োজিত নাগরিক শোক সভায় বক্তব্যে আগেবঘন স্মৃতিচারণ করেন কাইয়ুম চৌধুরীর দীর্ঘ ৬২ বছরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সৈয়দ শামসুল হক। তিনি কিশোর, তরুণ, যুবক, পরিণত, বয়োবৃদ্ধ সব বয়সের কাইয়ুম চৌধুরীকে শ্রোতাদের সামনে তুলে ধরেন। স্মৃতি থেকে আনন্দ-বেদনার কথা বলতে গিয়ে বারবার অশ্রুসজল হয়ে পড়েন সব্যসাচী এই লেখক।

কাইয়ুম চৌধুরীর লেখা কবিতাগুলো প্রকাশের উদ্যোগ নিতে সবার প্রতি অনুরোধ জানান সৈয়দ হক।

কবিতার লাইনে কাইয়ুম চৌধুরীর প্রয়াণকে 'মৃত্যুহীন মৃত্যুর চিত্রণ জীবনের তুলিতে' আখ্যা দেন সৈয়দ হক। প্রিয় বন্ধুর স্মৃতিতে নিবেদন করে একটি কবিতাও লিখেছেন। শোক সভায় তা আবৃত্তি করেন। কিশোর বয়সের স্মৃতি তুলে ধরে বলেন, 'সদরঘাটে হোটেলে বসে আমাদের কথা হতো। 

পঞ্চাশের দশকে লেখা সৈয়দ হকের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'বোমা বৃষ্টির গান'-এর প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন কাইয়ুম চৌধুরী। বইটি পরে আর প্রকাশ পায়নি। সে স্মৃতি তুলে ধরে সব্যসাচী লেখক বলেন, 'অনেকেই কাইয়ুম চৌধুরীকে বাণিজ্যিক শিল্পী বলে খাটো করার চেষ্টা করতেন। তারা দেখুক মাথার ওপর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও কামরুল হাসান থাকার পরও যুবক কাইয়ুম চৌধুরী নিজেকে প্রতি ধাপে উত্তীর্ণ করেছেন।  

বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নাগরিক শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন সাহিত্য সমালোচক অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর। বক্তৃতা করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, চিত্রশিল্পী হাশেম খান, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাত।

কিংবদন্তি শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর স্মৃতিচারণ করে আনিসুজ্জামান বলেন, 'প্রচ্ছদ অঙ্কনে তিনি এমন এক বিশেষত্ব তৈরি করেছিলেন, কেউ বই লিখলেই প্রচ্ছদের জন্য কাইয়ুম চৌধুরীর কথাই ভাবতেন। আমার ছয়টি বইয়েরই প্রচ্ছদ করেছেন তিনি।' ব্যবহারিক শিল্পের জন্য কাইয়ুম চৌধুরী খ্যাতি পেলেও ক্যানভাসেও নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। শুধু চিত্রে নয়, শিল্পের সব শাখায় বিচরণ করেছেন তিনি। পঞ্চাশের দশকে চলচ্চিত্র নিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। 

অন্য বক্তারা তাদের স্মৃতিকথায় কাইয়ুম চৌধুরীর কীর্তিকে তুলে ধরেন। সভাপতির বক্তৃতায় বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর কাইয়ুম চৌধুরীর আঁকা ছবিগুলো নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী আয়োজনের দাবি জানান। এদিকে বাংলা একাডেমি কাইয়ুম চৌধুরীর প্রচ্ছদ আঁকা বই নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ভবনে এই প্রদর্শনী আগামী রোববার (২১ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে।



গত ৩০ নভেম্বর চলে গেছেন লেখচিত্রের কিংবদন্তি শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। বইয়ের প্রচ্ছদ অঙ্কনকে শিল্পের মর্যাদায় আসীন করেন তিনি। শুধু বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ৬০০ বইয়ের প্রচ্ছদ অঙ্কন করেছেন কাইয়ুম চৌধুরী। দেশের প্রায় সব বরেণ্য লেখক-কবির বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন। বাংলা বর্ণমালাকে নতুন রূপ দিয়েছেন। তেল ও জলরঙে আঁকা ছবিও বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে শিল্পাঙ্গনে।

এই বিভাগে আরো আছে

চিত্র শিল্পী 5207959209138635933

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সঙ্গে থাকুন

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক

বৈশিষ্ট্যযুক্ত

বিশ্বসেরা ১০ কার্টুনিস্ট

শিল্পী রফিকুননবী সাধারণ মানুষের কাছে যতটা না তার ফাইন আর্টসের জন্য পরিচিত, তার চেয়ে অনেক বেশি জনপ্রিয় তার ‘টোকাই’ কার্টুন চরিত্রের জন্য। এ ...

-

  • ফেসবুকে অনুসরণ করুন

    আঁকা-আঁকি আহ্ববান

    আপনার আঁকা, মজার মজার লেখা, ছবি আঁকার কলা-কৌশল, শিল্পীর জীবনী, প্রবন্ধ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অথবা প্রদর্শনীর সংবাদ টুনস ম্যাগে ছাপাতে চাইলে পাঠিয়ে দিন। আমাদের ইমেইল করুন- [email protected] এই ঠিকানায়।

    সহায়তা করুন

    item